ঘোষণা ছাড়াই ফার্নেসের দাম বৃদ্ধি কাম্য নয়

Passenger Voice    |    ১২:৫৪ পিএম, ২০২১-১১-১৩


ঘোষণা ছাড়াই ফার্নেসের দাম বৃদ্ধি কাম্য নয়

ডিজেল ও কেরোসিনের দাম সর্বশেষ বাড়ানো হয়েছে গত ৪ নভেম্বর। এর প্রভাবে বাস ভাড়া বেড়েছে। ট্রাক ভাড়াও বেড়েছে। সুযোগ কেউ হাতছাড়া করেনি। যাত্রী ও পণ্যবাহী নৌযানেরও ভাড়া বেড়েছে। অংশীজনের সঙ্গে কোনো আলোচনা ও গণশুনানি ছাড়া কেবল গণপরিবহন মালিকদের আবদারমতো জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করায় সর্বমহলের সমালোচনার শিকার হচ্ছে সরকার। অন্যদিকে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়া অনেকটা চুপিসারে বাড়ানো হচ্ছে আরেক জ্বালানি পণ্য ফার্নেস অয়েলের দাম। গত চার মাসে এ জ্বালানির দাম বাড়ানো হয়েছে লিটারে ২০ টাকা বা ৪৭ দশমিক ৬২ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক বাজারে কয়েক মাস ধরেই বাড়ছে ফার্নেস অয়েলসহ সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম। তাই বাড়াতে হয়েছে আমাদেরও। কিন্তু চুপিসারে বাড়ানোতেই যত বিপত্তি। বাসভাড়া বাড়ানোর বৈঠকে মূলত ব্যবহারকারী বিশেষ করে যাত্রীদের প্রতিনিধিই ছিল না। এরই মধ্যে গোপনে বাড়ানো হয় ফার্নেস অয়েলের দাম। লোকসানের অজুহাতে ভবিষ্যতে আবারও ফার্নেস অয়েলের দাম বাড়ানো হতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের চেয়ে কম দামে ফার্নেস অয়েল বিক্রি হচ্ছে মাত্র তিনটি দেশে। এগুলো হলো অ্যাঙ্গোলা, বলিভিয়া ও সেনেগাল। তাই বাংলাদেশে ফার্নেস অয়েলের দাম বর্তমানে গ্রহণযোগ্য পর্যায়েই রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

যতই গোপনে দাম বাড়ানো হোক, চেপে রাখা সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত ভোগান্তি বাড়বে সাধারণ মানুষেরই।

বৃহস্পতিবার জ্বালানিবিষয়ক প্রতিবেদকদের এফইআরবি আয়োজিত ওয়েবিনারে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব বলেছেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পলিটিক্যাল সিদ্ধান্ত। আমলাদের এত বড় সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা নেই। গত ২ বছরে সরকার বিপিসি থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা না নিলে হয়তো আরও ছয় মাস অপেক্ষা করা যেত।

হয়তো জ্যেষ্ঠ সচিব ঠিকই বলেছেন। কিন্তু তেল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়া সঠিক ছিল না। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দর সাধারণ ভোক্তাদের ওপর না চাপিয়ে কর কমিয়ে দিয়েছে ভারত। ফলে সেখানে দাম কমবে। অথচ আমাদের সরকার লোকসান চাপিয়েছে সাধারণ মানুষের ওপরই।

এখন আবার ফার্নেস অয়েলের দাম বাড়ানো হয়েছে। দাম বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়নি বলে তা কি গোপন থাকবে? থাকবে না। কেননা ভোক্তা তো সাধারণ মানুষই হচ্ছে না। লুকোচুরি না করে সরকারের উচিত আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে জ্বালানি তেলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করা। আমরা মনে করি, পূর্বঘোষণা ছাড়া ফার্নেস অয়েলের দাম বাড়ানো প্রজ্ঞার পরিচয় নয়। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম হ্রাস-বৃদ্ধির সঙ্গে দেশীয় বাজারেও সে অনুযায়ী সমন্বয়ের উদ্যোগ নিতে হবে এবং তা দেশবাসীকে জানিয়েই।